১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন দ্বাদশ শ্রেণির সাদ, স্বপ্ন নিভে গেল গুলিতে

কিশোর ডাইজেস্ট ডেস্ক
১০ অগাস্ট ২০২৪, ১২:৫৪
আফিকুল ইসলাম সাদ। ছবি: সংগৃহীত

পরিবারের বড় ছেলে ছিল আফিকুল ইসলাম সাদ। স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হয় ঢাকার সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ইচ্ছা পূরণে মন দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে স্বৈরাচার পতনের এক দফা আন্দোলনের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্য শিক্ষার্থীদের মতো দেশ বাঁচানোর জন্য রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাদ। ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতেও অংশ নেয় এ মেধাবী ছাত্র। মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হঠাৎ একটি গুলি সাদের বুকের বাঁ পাশে ঢুকে যায়। ঢলে পড়ে রাস্তায়। সহযোদ্ধারা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত বৃহস্পতিবার সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার দরগ্রাম এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে সাদ। ৫ আগস্ট তার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় পরিবারের সদস্যদের। এর পর আর যোগাযোগ করা যায়নি। সেদিন গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সাদের সন্ধানে বের হন তার স্বজন। তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সাভারের বিভিন্ন হাসপাতালে তন্ন তন্ন করে খোঁজ করা হয়। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন, সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভর্তি আছে। সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায় সাদকে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, সাদরা দুই ভাই। ছোটজন হাইস্কুলে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবি আদায়ের সংগ্রামে শামিল হয়ে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশের গুলিতে আহত হয় সাদ।

নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার দুই ছেলের মধ্যে সাদ বড়। ও লেখাপড়া করে ডাক্তার হবে সেই আশায় ভালো কলেজে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু আমার সব আশা শেষ হয়ে গেল।’ 

সাদের মা বিনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আন্দোলনে যাওয়ার সময় সাদ বলেছিল, মা আমি যদি মারা যাই তাহলে আমার জন্য কোনো দুঃখ করো না। আমার জন্য দোয়া করো।’

সর্বাধিক পঠিত