১৮ অক্টোবর ২০২৪

বয়ঃসন্ধিকাল কখন আসে, কী আচরণ করবেন?

কিশোর ডাইজেস্ট ডেস্ক
১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৬
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়ে উভয়ের শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। ছবি : ফ্রিপিক

বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়ে উভয়ের শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এ সময়ে ছেলেমেয়েরা যেমন দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে, তেমনই তাদের চিন্তা-চেতনায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবর্তন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১০ ও ১৯ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময়টাকে কৈশোর বলে। এর যে কোনও সময়ে বয়ঃসন্ধিকাল আসতে পারে। এটা মূলত কৈশোর ও যৌবনের মধ্যবর্তী পর্যায়। অনেক সময় ১৯ বছরের পরও বয়ঃসন্ধির ব্যাপ্তি থাকতে পারে। যা বিভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের ওপর নির্ভর করে।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল ছেলেদের চাইতে কিছুটা আগে শুরু হয়। মূলত ১০ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে যে কোনও সময় তা হতে পারে। অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল আসে ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে।

এ বয়সে মেয়েদের উচ্চতা বাড়ে। শরীরের বিভিন্ন অংশ স্ফীত হয়। ঋতুচক্র শুরু হয়। এ ছাড়া নানা পরিবর্তন আসে। ছেলেদের এ সময় দেহের উচ্চতা দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে, গলার স্বর ভারী হয়ে আসে, কাঁধ চওড়া হয়, পেশি সুগঠিত হয়। মুখে দাড়ি-গোঁফ ওঠে। এ ছাড়া ছেলেদের নানা পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

বয়ঃসন্ধিকালীন এই সময় থেকে ছেলেমেয়েদের আত্মপরিচয় গড়ে উঠতে শুরু করে। আত্মপরিচয় বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে, তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা তৈরি হয়। তার কী পছন্দ-অপছন্দ, সে কী চায়। এ ছাড়া নিজের জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম সম্পর্কে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে এবং তারা পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন মানুষ হিসেবে জীবনের এই পর্যায়ে আত্মপ্রকাশ করে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ছোট থেকে বড় হওয়ার এই সময়টাতে বড় ধরনের মানসিক ভাঙা-গড়ার মধ্যে দিতে হয় ছেলেমেয়েদের। এ সময় তাদের মধ্যে হরমোনাল কারণে আবেগের প্রাবল্য দেখা দেয়। মুড সুইং হয় বা মন মেজাজ খুব দ্রুত ওঠানামা করে। আনন্দ, রাগ, দুঃখের মতো অনুভূতিগুলো তীব্র মাত্রায় দেখা যায়। আজ আনন্দে উল্লাস করলে আরেক দিন মনমরা ভাব থাকে। তবে এ বয়সের প্রাণচাঞ্চল্য ভেতরের সৃজনশীলতার বিকাশে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

বয়ঃসন্ধিতে থাকা ছেলেমেয়েরা ভীষণ কৌতূহলপ্রবণ হওয়ায় অনেক সময় তাদের বিপথগামী হওয়ার, মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়া, অযাচিত ঝুঁকি নেওয়া বা অপসংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। এই বয়সে ছেলেমেয়েদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতিও শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

সর্বাধিক পঠিত