একসময় কাজ করতেন রেস্তোরাঁর ওয়েটার হিসেবে, আর এখন ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠানের মালিক। বলছিলাম, জিপিইউ ও কম্পিউটার চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও জেনসেন হুয়াংয়ের কথা।
জেনসেন হুয়াং এখন বিশ্বের ১১তম ধনী ব্যক্তি। বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, হুয়াংয়ের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ এখন প্রায় ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। ফোর্বসের রিয়েল-টাইম বিলিয়নিয়ার তালিকায় এটি এখন পর্যন্ত তার সর্বোচ্চ অবস্থান। এ তালিকা অনুযায়ী, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং ভারতীয় ধনকুবের রতন টাটার চেয়েও বেশি ধনী গ্লোবাল এ টেক সুপারস্টার।
মাইক্রোসফট ও অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে এনভিডিয়া। এখন কোম্পানিটির বাজারমূল্য প্রায় ৩.৩৩৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি মাসে (১৮ জুন) চিপমেকার প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারমূল্য ৩.৫ শতাংশ বেড়ে ১৩৫.৫৮ ডলারে পৌঁছায়।
এনভিডিয়ার সদর দফতর ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায়। এটি একটি সফ্টঅয়্যার এবং হার্ডঅয়্যার প্রস্তুতকারী সংস্থা, যা গ্রাফিক প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ), অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই), মোবাইল কম্পিউটিং এবং সিস্টেম অন চিপ ইউনিট (এসওসি) তৈরি করে এবং বিক্রি করে।
ওয়াল স্ট্রিটে সর্বাধিক ব্যবসা করা কোম্পানি এখন এনভিডিয়া, যার গড় দৈনিক টার্নওভার ৫০ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরেই এনভিডিয়ার শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ১৮২ ভাগ। আর গত বছর কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য বেড়েছিল তিনগুণ।
কে এই জেনসেন হুয়াং?
১৯৬৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাইওয়ানের তাইনানে জেনসেনের জন্ম। জেনসেনের যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন তার পরিবার থাইল্যান্ডে চলে যায়। তারপর ৯ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য তাকে আমেরিকার ওয়াশিংটনে এক আত্মীয়ের কাছে পাঠানো হয়। ১০ বছর বয়সে কেনটাকির ওনিডায় একটি স্কুলে ভর্তি হন। কয়েক বছরের মধ্যে, জেনসেনের বাবা-মা আমেরিকায় চলে যান। ১৬ বছর বয়সে ওরেগনের অ্যালোহা থেকে স্কুল পাশ করেন।
১৯৮৪ সালে ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন জেনসেন। ১৯৯২ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করেন।
সাফল্য খুব একটা সহজে ধরা দেয়নি হুয়াংয়ের কাছে। তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন বাসবয় হিসেবে। তারপর যোগ দেন ডেনিস রেস্তোরাঁতে। প্রথমে ডিশওয়াশার এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে ওয়েটার হিসেবে কাজ করেন সেখানে।
১৯৯৩ সালে ক্রিস মালাচোস্কি এবং কার্টিস প্রিমের সঙ্গে এনভিডিয়া তৈরি করেন জেনসেন। এনভিডিয়ার সিইও এবং প্রেসিডেন্টও নিযুক্ত হন তিনি। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল ৩০। ২০০৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে ২৪.৬ মিলিয়ন ডলার বেতনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৬১তম সর্বোচ্চ বেতনভোগী সিইও হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।