বাবা বাংলার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলি আর মা ডোনার আদরের মেয়ে সানা গাঙ্গুলি। লেখাপড়া শেষ করে শুরু করেছেন চাকরিজীবন। উচ্চশিক্ষা আর চাকরি, দুইই তাঁর চলছে ইংল্যান্ডে। কিন্তু মেয়ের ক্যারিয়ার নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে বাবার। কী সেই খেদ?
টিভি শো দাদাগিরির সাম্প্রতিক সিজনে হাজির হয়েছিলেন বাংলার গায়কেরা। মনোময় থেকে লোপামুদ্রা, নিকিতা থেকে বাবুলেরা। সৌরভের সঙ্গে মনখোলা আড্ডায় সামিল হন তাঁরা। বীরভূমের হয়ে খেলছিলেন গায়িকা অন্তরা মিত্র। তাঁর বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মছলন্দপুর। সেখানেই জন্ম বেড়ে ওঠা, স্কুলে পড়াশোনা। তারপর গানের সূত্রে মুম্বাই। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
অন্তরা জানান, তিনি পড়াশোনা করেছেন ভূদেব স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয় থেকে। তাঁদের ব্যাচের মেয়েরা ছিল ক্রিকেটপাগল। সৌরভ শুরু করেছেন, মন তখন উচ্ছ্বল। নিজেরা চাঁদা তুলে কিনেছিলেন ক্রিকেট কিট। এমনকি খেলতেনও রোজ। যেহেতু কোনও ট্রেনিং নেই, তাই চোটও পেতেন। তবে খেলা থামাননি। তবে দুঃখের বিষয়, ২০০০ সালের বন্যায় ভেসে যায় গোটা ক্রিকেট কিট।
অন্তরার ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগ দেখে খুশি হন সৌরভ গাঙ্গুলি। অন্তরাকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন টিভিতে নারীদের ক্রিকেট দেখতে ভালো লাগে?’ অন্তরা উত্তরে বলেন, ‘অবিশ্বাস্য লাগে’। সৌরভ এর পরেই তোলেন মেয়ের প্রসঙ্গ। বলেন, ‘সানা যখন ছোট ছিল। তখন যদি এত সুযোগ থাকত মেয়েদের ক্রিকেটে, আমি ওকে ক্রিকেট খেলতে দিতাম। শেষ তিন বছরে মেয়েদের ক্রিকেট খুব উন্নতি করেছে। ওদের পে স্কেল এখন ছেলেদের মতোই। বিরাট কোহলি যা টেস্ট ম্যাচে পয়সা পায়, স্মৃতি মন্দানাও তা-ই পায়। আমি তো সানাকে বলি, তুমি ভুল সময়ে জন্মেছ। এখন হলে তোমাকে আমি ক্রিকেট খেলতে পাঠাতাম।’
সৌরভ-কন্যা সানা গাঙ্গুলি ইউসিএলে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক হয়েছেন। বর্তমানে কাজ করছেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংস্থা ইনোভারভিতে। বছরে কয়েক লাখ টাকার প্যাকেজ তাঁর। মায়ের সঙ্গে নাচ করেছেন দীর্ঘ সময়। বহু স্টেজ শোতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে পেশা হিসেবে বাছেননি নাচ।
তাহলে কি ব্যাট হাতে মেয়েকে দেখতে পারেননি বলে সৌরভের মনে কষ্ট জমে আছে? যুবরাজ-হরভজনদের মতো ক্রিকেটারেরা যেখানে ক্যারিয়ারে সৌরভের পথপ্রদর্শক, সেখানে নিজের মেয়ের জন্য তেমন কিছু করতে পারলেন না মহারাজ?