১৮ অক্টোবর ২০২৪

কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনার ১০ কৌশল

আশিকুর রহমান
১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮
সময় ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ হলো লক্ষ্য স্থির করা। ছবি: সংগৃহীত

কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা, যা একজন শিক্ষার্থীর জীবনে সাফল্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ছাত্রজীবন থেকে এই অভ্যাস করা গেলে কর্মজীবনেও কাজে দেবে। কীভাবে কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনা করা যায়, সে সম্পর্কে বলেছেন দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন। তাঁর পরামর্শগুলো লিখেছেন আশিকুর রহমান।  

লক্ষ্য স্থির করা
সময় ব্যবস্থাপনার প্রথম পদক্ষেপ হলো লক্ষ্য স্থির করা। একটি স্পষ্ট লক্ষ্য সময়ের সঠিক ব্যবহারে সাহায্য করে। লক্ষ্য নির্ধারণের মাধ্যমে যে কেউ যেকোনো পরিস্থিতিতে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেন, যা ব্যক্তির মানসিক চাপ কমাতে এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া লক্ষ্যগুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার ফলে অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি এড়ানো সম্ভব হয়।

পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ
লক্ষ্য স্থির করার পর পরবর্তী পদক্ষেপ হলো কার্যকর পরিকল্পনা তৈরি করা। এ জন্য কোনো ব্যক্তিকে তাঁর দৈনন্দিন কাজ ও দায়িত্বের তালিকা তৈরি করতে হবে। এরপর প্রতিটি কাজের গুরুত্ব এবং সময়সীমা অনুযায়ী অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। তুলনামূলক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে সম্পন্ন করতে হবে এবং কম জরুরি কাজগুলো ক্রমানুসারে শেষ করতে হবে।

সময় ব্লকিং
সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হলো সময় ব্লকিং পদ্ধতি, যা ব্যক্তির দিনকে সময়ের ছোট ছোট ব্লকে ভাগ করে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি সময়ের প্রতিটি ব্লকে একটি একক কাজ বা অনুরূপ কাজের গ্রুপে ফোকাস করতে পারেন। অন্য যেকোনো সময় ব্যবস্থাপনা কৌশলের মতো সময় ব্লক পদ্ধতি ব্যবহার করেও সাফল্য পাওয়া সম্ভব।

বিরতি নেওয়া
কাজের মধ্যে নিয়মিত বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি যে কাউকে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে কাজ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ৫০ মিনিট কাজ করার পর ১০ মিনিট বিরতি নিলে কর্মক্ষমতা বাড়ে।

প্রযুক্তির ব্যবহার
বর্তমানে প্রযুক্তি সময় ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর মাধ্যম হতে পারে। বিভিন্ন অ্যাপ এবং সফটওয়্যার রয়েছে, যা একজন মানুষের সময় ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ করতে পারে, যেমন Google Calendar, Trello ও Todoist ইত্যাদি। এই অ্যাপগুলো ব্যক্তির সময় পরিকল্পনা ও কাজের অগ্রগতি ট্র্যাক করতে সহায়তা করে।

পরিবেশ তৈরি করা
যেকোনো কাজ সঠিকভাবে শেষ করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ জরুরি। শান্ত, সুশৃঙ্খল ও প্রেরণামূলক পরিবেশ এর উদাহরণ হতে পারে। এমন যথার্থ পরিবেশ ব্যক্তির যেকোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
যেকোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে শুধু সাময়িক লক্ষ্য নয়, ভবিষ্যতের লক্ষ্য মাথায় রাখতে হবে। পরিকল্পনা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হতে পারে, যেমন ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান, সেই লক্ষ্য স্থির করে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করতে পারেন।

আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা
আত্মবিশ্বাসকে যেকোনো কাজের ভিত্তি বলা যায়। যখন একটি কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন, তখন আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাবে। এমন আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে হবে, যাতে যেকোনো দক্ষতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।

সময় পর্যালোচনা করা
সময় ব্যবস্থাপনাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। সপ্তাহের শেষে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে হবে। কোন কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং কোনগুলো বাকি রয়েছে, তা বাছাই করতে হবে। এই প্রক্রিয়া ব্যক্তির উন্নতির নতুন কৌশল হিসেবে কাজ করবে।

আত্মোন্নয়ন
সময় ব্যবস্থাপনা শুধু কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নয়, এটি নিজের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সহায়ক। কার্যকর ব্যবস্থাপনার বিষয় জানতে প্রতিনিয়ত আত্মোন্নয়ন প্রয়োজন। অল্প হলেও নিয়মিত আত্মোন্নয়নের ফলে ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে, যা চাপ মোকাবিলা করে আরও বেশি কাজ করতে সাহায্য করে।

সর্বাধিক পঠিত