বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের শরীর অনেক বেশি সংবেদনশীল এবং বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বড়দের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল হয়। তাই খুব সহজেই বাচ্চারা জ্বর, সর্দি-কাশি এবং বিভিন্ন সংক্রমণের শিকার হয়।
হজমের সমস্যাও বাচ্চাদের মধ্যে বেশ দেখা যায়। দুর্বল হজমশক্তির কারণে বাচ্চাদের পেটে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। ফলে খেতে না চাওয়া, বমি করা, কান্নাকাটি করা, পেট ফুলে থাকা, পেট খারাপের মতো সমস্যাও হতে পারে।
কিছু ঘরোয়া উপায়ে আপনার বাচ্চাকে এই সমস্যা থেকে বের করে আনতে পারেন। স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী, আসুন জেনে নিই প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চাদের হজমশক্তি কীভাবে শক্তিশালী করে তুলবেন—
মাতৃদুগ্ধ পান করান
বাচ্চাদের হজমশক্তি দুর্বল হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, নবজাতকদের কমপক্ষে টানা প্রথম ছয় মাস মাতৃদুগ্ধ পান করানো উচিত। কারণ, মাতৃদুগ্ধে শিশুর প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টিগুণ বর্তমান, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া শিশুর সঠিক হজমেও সহায়তা করে।
আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ান
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার বাচ্চাদের হজমক্ষমতা শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন বিনস, বেরি জাতীয় ফল, আপেল, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি বাচ্চাদের হজমক্ষমতা ঠিক রাখতে অত্যন্ত সহায়ক এবং বাচ্চার অন্ত্র সুস্থ রাখে।
পর্যাপ্ত তরল পান করান
আপনার সন্তানকে হাইড্রেটেড রাখুন। বাচ্চাদের যথাযথ সময়ে পর্যাপ্ত তরল পান করানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এতে বাচ্চার অন্ত্র সুস্থ থাকে। অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার ছাড়া দুধও বাচ্চাদের অন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।
ম্যাসাজ করুন
ম্যাসাজ কেবল বাচ্চাদের হাড় এবং পেশি শক্তিশালী করে তুলতেই সহায়তা করে না, পাশাপাশি এটি বাচ্চাদের হজম-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো দূর করতেও সহায়ক। ভালো মানের বেবি ম্যাসাজ অয়েল নিয়ে বাচ্চাদের পেট এবং নাভির চারপাশে আলতো করে বৃত্তাকার পদ্ধতিতে মালিশ করুন। এটি বাচ্চাদের পেটে আটকে থাকা গ্যাস বের করে দিতে সহায়তা করে। আপনার শিশুর পা, তার পেটের উপর আলতো করে চেপেও ম্যাসাজ করতে পারেন।
ঢেঁকুর তোলান
বাচ্চারা মাতৃদুগ্ধ কিংবা বোতলের দুধ খাওয়ার সময় বাতাসও গ্রহণ করে ফেলে। ফলে পেটে ফোলাভাব, ব্যথা, গ্যাসের সমস্যা, বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা শিশুর পক্ষে অত্যন্ত অস্বস্তিকর। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বাচ্চাদের খাওয়ানোর পর সঠিকভাবে ঢেঁকুর তোলানো অত্যন্ত জরুরি। বাচ্চাদের কাঁধের উপর শুইয়ে, পিঠে আলতো করে মালিশ বা চাপড় দিতে থাকলে, সহজেই ঢেঁকুর তুলতে পারবে।
আর একটি কথা। অনেক মা-বাবার ধারণা, বাচ্চাদের বড় হওয়ার সাথে সাথে বেশি করে খাওয়ানো উচিত। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। প্রত্যেক শিশুকে পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ানো উচিত, তবে অতিরিক্ত নয়। বাচ্চার যে কোনও সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। খাবারের ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হতে পারেন।