১৮ অক্টোবর ২০২৪

হাথুরুসিংহকে মাসে কত টাকা বেতন দেয় বিসিবি, স্থানীয় কোচরা কত টাকা বেতন পান?

কিশোর ডাইজেস্ট ডেস্ক
০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৪
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি স্টাফদের পেছনে প্রতিমাসে বিসিবিকে ব্যয় করতে হয় অঢেল অর্থ। এ দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া বিদেশি হলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এই লঙ্কান কোচ প্রতি মাসে ৩২ হাজার ৫০০ ডলার বেতন পান। বাংলাদেশি টাকার মূল্যে যা ৩৫ লাখ ৭ হাজার ৬৩৭ টাকার সমান। বেতন ছাড়াও বিসিবি থেকে আরও অন্যান্য সুবিধাও পেয়ে থাকেন তিনি। তার জন্য বছরে বিমান ভাড়া বাবদ বরাদ্দ ২৫ লাখ টাকা। ঢাকার আবাসন ও পরিবহন সুবিধাও পেয়ে থাকেন তিনি। এছাড়া দল জয় পেলে উইনিং বোনাস তো আছেই।

এ মুহূর্তে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ সদস্যদের মধ্যে সবচেয়ে কম বেতন অস্ট্রেলিয়ান ট্রেনার নাথান কেলির। সেটাও টাকার অঙ্কে মাসে সাড়ে ৯ লাখ। এমন পারিশ্রমিক দেখলে কোচদের চাকরিকে স্বাভাবিকভাবেই লোভনীয় মনে হবে। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটের চিত্র ভিন্ন। বিসিবির অধীনে জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় কোচ মিলিয়ে বর্তমানে ৯৫ জন কোচ কাজ করছেন। চার শ্রেণিতে থাকা এই কোচদের মধ্যে সর্বনিম্ন মাসিক ১৪-১৫ হাজার টাকার বেতনের কোচও ছিলেন, সর্বোচ্চ বেতন ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মতো।

প্রায় তিন বছর ধরে স্থানীয় কোচদের বেতন-ভাতা বাড়ায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অবশেষে গ্রেডিং পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করল দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। প্রথমবারের মতো স্থানীয় কোচদের নিয়ে এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। কয়েকদিন আগে হওয়া বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ১১তম সভায় কোচ ও ট্রেনার নতুন বেতন কাঠামোকে অনুমোদনও দিয়েছে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড। এতে করে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন-ভাতা বেড়েছে স্থানীয় কোচদের। বিসিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, এই পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে কোচদের বেতন-ভাতা এখন ‘কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর’ (কেপিআই)-এর ওপর নির্ভর করে অটোমেটিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে।

কোচদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চারটি গ্রেড তৈরি করেছে বিসিবি। ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’—গ্রেডগুলোর মধ্যে আছে আরও তিনটি করে মোট ১২টি গ্রেড পদ্ধতি। অর্থাৎ গ্রেড ‘এ’ তে থাকা কোচদের আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এভাবেই পুরো পদ্ধতি সাজানো হয়েছে। এতে করে এখন থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ থেকে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাবেন দেশীয় কোচরা। তবে সুখবর হচ্ছে, আগে জেলা পর্যায়ের কোচদের নিয়োগ দেওয়া হতো মাত্র ১৫ হাজার টাকায়। এতে অনেকেই বিসিবির কোচ হতে অনাগ্রহ দেখাতেন, আবার অনেকেই কোচিং ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে যেতেন। এবার তাদের সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রথমবার নিয়োগ পেলেই ২৫ হাজার টাকা করে বেতন পাবেন তারা। এরপর ধীরে ধীরে পারফর্ম করে গ্রেডিংয়ে পদোন্নতি পাবেন তারা।

সম্প্রতি বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধীনে কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিন সাবেক ক্রিকেটার। তাদের দুজনের বেতন ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অর্থাৎ গ্রেডিং পদ্ধতিতে ক্যাটাগরি ‘এ’ তে সুযোগ পেয়েছেন তারা। এ ছাড়া চুক্তিভিত্তিক কোচ হিসেবে রাজিন সালেহকে প্রতিদিন দেওয়া হবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। তিন মাসের মেয়াদি নিয়োগ হলেও তিনিও ক্যাটাগরি ‘এ’ তে সুযোগ-সুবিধাগুলো ভোগ করবেন।

বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধীনে বর্তমান কাজ করা কোচের সংখ্যা প্রায় ৯৫ জন। তাদের মধ্যে বিসিবির সেন্ট্রাল বিভাগে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছেন নতুন তিনজনসহ মোট ২৪ জন কোচ। বিভাগীয় পর্যায়ে কাজ করা কোচের সংখ্যা ৯ জন, তাদের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে আছেন জেলা পর্যায়ের কয়েকজনও। দেশের মোট ৬৪ জেলার মধ্যে এখন বিসিবির নিয়োগপ্রাপ্ত কোচ আছেন ৬২ জন। সিলেটের মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে নেই কোনো জেলা কোচ। এ ছাড়া বান্দরবানসহ আরও কয়েক জায়গায় কোচ সংখ্যা নেই। পুরো সিস্টেমে থাকা সব কোচের বেতন-ভাতা গ্রেডিং পদ্ধতিতে ভাগ করে দিয়েছে বিসিবি।

সর্বাধিক পঠিত