২১ নভেম্বর ২০২৪

অলিম্পিকের সোনার পদক কি পুরোটাই খাঁটি সোনার? পদকের ওজন এবং আর্থিক মূল্য কত?

কিশোর ডাইজেস্ট ডেস্ক
১৭ জুলাই ২০২৪, ২০:৪১
অলিম্পিকের সোনার পদকে আছে মাত্র ৬ গ্রাম সোনার প্রলেপ। ছবি: সংগৃহীত

একটি অলিম্পিক পদক বিশ্বের হাজারো অ্যাথলেটের স্বপ্ন। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’ কোনো মতে একটি পদক পেয়ে নিজের নাম সোনার অক্ষরে লিখিয়ে রাখতে চান তাঁরা। সে পদকের মূল্য কি বাজারমূল্যে মাপা যায়? যদি বলা হয়, অলিম্পিকের একটা সোনার পদকের আর্থিক মূল্য কত? প্রশ্নটা অনেকের কাছেই বেশ অদ্ভুত শোনাবে। অলিম্পিকের একটা সোনার পদকের মূল্য কাগুজে মুদ্রায় বিচার করা যায় নাকি! সোনার পদকের সঙ্গে যে আবেগ জড়িয়ে আছে, যে সম্মান ও খ্যাতি জড়িয়ে আছে, সেটি তো অমূল্য। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পরই তো এই পদক। এই পদকের পেছনে কত কষ্ট, কত পরিশ্রম। বছরের পর বছর একটা লক্ষ্যে চোখ রেখেই আসে চূড়ান্ত সাফল্য, গলায় পরিয়ে দেওয়া হয় সেই পদক। শুধু আর্থিক দৃষ্টিকোণ থেকে অলিম্পিকের একটা সোনার পদকের মূল্যায়ন করা কঠিনই।

অলিম্পিক পদকের আবেগ–মূল্য অনেক।ছবি: সংগৃহীত

তবে প্রশ্ন আসতেই পারে, অলিম্পিকের সোনার পদক কি পুরোটাই খাঁটি সোনার? এর ওজন কত? নিউইয়র্ক টাইমস ২০২২ সালে একটা প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বরাতে অবশ্য যা লিখেছিল, তাতে নিতান্তই বৈষয়িক ব্যক্তির বেশ হতাশ হওয়ারই কথা। আইওসি জানিয়েছিল অলিম্পিকের সোনার পদকে সোনার পরিমাণ আসলে মাত্র ৬ গ্রাম। পদকের ওজন ৫৫৬ গ্রাম। এর বেশির ভাগই রুপা—৯২.৫ শতাংশই! এই সোনার পদকের দাম ৮০০ ডলার। ২০২১ সালে টোকিওতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ অলিম্পিকের আসরে একটি সোনার পদকের আর্থিক মূল্য এমনই ছিল। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৪ হাজার টাকার একটু বেশি।

রুপার পদকে অবশ্য পুরোটাই খাঁটি রুপা থাকে। এর ওজন ৫৫০ গ্রাম। দাম ৪৫০ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৩ হাজার টাকা। ব্রোঞ্জপদকের দাম অবশ্য বাংলাদেশি মুদ্রায় বলতে গেলে নামমাত্রই। এতে ৯৫ শতাংশ তামা এবং ৫ শতাংশ দস্তা থাকে। দাম মাত্র ৫ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫৮৭ টাকা।

অলিম্পিক সোনার পদকে সোনার পরিমাণ মাত্র ৬ গ্রাম। ছবি: রয়টার্স

আগেই বলা হয়েছে অলিম্পিক সোনার পদকের সঙ্গে বিজয়ীর আবেগ জড়িয়ে থাকে। এর ঐতিহাসিক মূল্যও আছে। ২০২২ সালে ১৮৯৬ অলিম্পিকের একটি সোনার পদক নিলামে বিক্রি হয়েছিল। সেটির দাম উঠেছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যেটি ২১ কোটি ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। আর্থিক প্রয়োজনে বা যেকোনো দাতব্য কাজে অলিম্পিকের সোনা জেতা অ্যাথলেটরা নিজেদের পদক বিক্রি করে থাকেন। ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকে অ্যাথলেটিকসে চারটি সোনার পদক জেতা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাথলেট জেসে ওয়েনের একটি সোনার পদক ২০১৩ সালে নিলামে উঠেছিল। সেটির দাম উঠেছিল ১৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ১৭ কোটি টাকারও বেশি।

একটা সময় পর্যন্ত অলিম্পিকে কিন্তু সোনার পদকে কোনো খাদ থাকত না। ১৯১২ সালের স্টকহোম অলিম্পিক পর্যন্ত সোনার পদক হতো পুরোটাই সোনা দিয়ে তৈরি। মাঝখানে একবার ১৯০৪ সালের সেন্ট লুইস অলিম্পিকে বিজয়ীদের সোনার তৈরি ছোট্ট একটি ট্রফি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খাঁটি সোনার বিষয়টি দিনে দিনে খরচান্ত হয়ে ওঠায় আইওসি সেই পথ থেকে সরে আসে।

সর্বাধিক পঠিত